Skip to main content
ইন্ডিয়ান খাবার

ইন্ডিয়া ভ্রমন খরচ

Last updated on November 18th, 2021 at 06:59 pm

আশা করি সবাই ভালা আছেন। আজ আমি লিখছি আমার ইন্ডিয়া ভ্রমনের তৃতীয় ও শেষ পর্ব। এটি হচ্ছে ইন্ডিয়া ভ্রমন কাহিনী [পর্ব-৩]। আগের দুই পর্বে লিখেছি কলকাতা-শিমলা-মানালি-দিল্লী-আগ্রা ভ্রমণের গল্প। এ পর্বে শুধু খরচ নিয়ে আলোচনা করবো। আগের পর্বদুটি এখনো পড়ে না থাকলে পড়ে নিন এক্ষুনি। আগের পর্বগুলোতে পুরো ভ্রমণের বর্ণনা দেখতে পারবেন।

⭐খরচের হিসাব⭐

বি. দ্র. (আমরা সবাই স্টুডেন্ট প্লাস বাজেট ট্রাভেলার। যারা সবজায়গায় অতি আরাম আয়েশ খোঁজেন তাদের জন্য এই পোস্ট নয়।)

বর্ডার পার হওয়ার পর থেকে রুপি এককে জনপ্রতি হিসেব দেওয়া হয়েছে এখানে। কনভার্সন রেট পেয়েছিলাম ১০০টাকা=৮৩ রুপি ও ১ ডলার=৭০.৫ রুপি

১ম দিনঃ (কলকাতা)

আমরা বর্ডার (পেট্রাপোল) থেকে সিএনজিতে করে যাই বনগাঁ স্টেশন। সিএনজি ভাড়া জনপ্রতি ৩০ রুপি। স্টেশনের পাশ থেকে দুপুরে মাছভাত খাই জনপ্রতি ৭০রুপি দিয়ে। বনগাঁ থেকে কলকাতার দমদম পর্যন্ত মেইল ট্রেনের টিকিট ১৫ রুপি। দমদম থেকে মেট্রোতে করে এসপ্ল্যানেড ১০ রুপি। এসপ্ল্যানেড থেকে হেঁটে নিউমার্কেটের মির্জা গালিব স্ট্রিটে পৌঁছাই। বাংলাদেশীরা সাধারণত এদিককার হোটেলেই থাকেন। ছয়জনের জন্য এক রুম ভাড়া করি ১২০০ রুপিতে। অর্থাৎ হোটেল ভাড়া জনপ্রতি ২০০ রুপি করে পড়েছিলো। মারকুইস স্ট্রিট, মির্জা গালিব স্ট্রিট এলাকায় ঘুরলে অসংখ্য হোটেল পাবেন। দরদাম করে যেখানে ভালো লাগে সেখানে থাকবেন। আমাদের মধ্যে একজনের আগে থেকেই সিম ছিলো আর বাকিরা মিলে একটা সিম কিনি ৩৫০ রুপি দিয়ে। অর্থাৎ জনপ্রতি ৭০রুপি করে পড়ে। পাসপোর্ট ভিসার জেরক্স (ফটোকপি) করতে জনপ্রতি ২০ রুপির মত লাগলো। একটি পেস্ট আর পারফিউম কিনি ৮৫ রুপি (জনপ্রতি ১৫ রুপির কম)

রাতে মদিনা মসজিদের বিপরীতের একটা হোটেলে ৩৫রুপির হাফ প্লেট কালাভূনা আর ২৫রুপির ভাত খাই। মোট ৬০ রুপি ডিনার খরচ।

১ম দিনের খরচঃ ৩০+৭০+১৫+১০+২০০+৭০+২০+১৫+৬০=৪৯০ রুপি

২য় দিন (কলকাতা)

শিমলার টয় ট্রেনগুলো কালকা থেকে ছাড়ে। আমাদের পরবর্তী গন্তব্য কালকা। কলকাতা-কালকা মেইল ট্রেনের এসিতে সিট নেই আগে থেকেই। স্লিপার কোচেও সিট নেই। ফরেনার কোটায় কিছু টিকিট থাকে যা ফেয়ারলি প্লেস থেকে দেওয়া হয়। আমরা সেখান থেকে ভাগ্যগুণে সেদিনেরই টিকিট পেয়ে যাই।

ভোরবেলা হোটেলের নিচ থেকে ট্যাক্সিতে করে ফেয়ারলি প্লেসে যাই। জনপ্রতি ২০রুপি করে খরচ পড়ে। চাইলে হেঁটেও যেতে পারেন। ফেয়ারলি প্লেসের পাশে ব্রেকফাস্ট করি স্ট্রিট ফুড রুটি আর সবজি দিয়ে। খরচ ২৫ রুপি।

ফরেনার কোটায় কলকাতা-কালকা ট্রেনের টিকিট ৯৯৫ করে পড়েছিলো। যা জেনারেলে ৬৬০ রুপি। অর্থাৎ দুয়েকদিন আগে কাটতে পারলেও আমাদের খরচ ৩৩৫ রুপি কমতো। খরচ কমাতে আর টিকিট পাওয়া না পাওয়ার অনিশ্চয়তা দূর করার জন্য ট্যুরের আগে থেকেই ট্রেনের টিকেট কেটে রাখবেন।

সেখান থেকে বেরিয়ে কিছু স্ট্রিট ফুড টেস্ট করি। খরচ ৩০ রুপি। হাটতে হাটতে মির্জা গালিব স্ট্রিটে ফিরে এসে সেই হোটেলেই গরুর গোশত দিয়ে দুপুরের খাবার খাই ৬৫ রুপিতে। বিকেলবেলা হোটেল থেকে চেকআউট করে পার্ক স্ট্রিট পর্যন্ত হেঁটে যাই। সেখান থেকে হাওড়ার লোকাল বাসে উঠি। ভাড়া ৭ রুপি করে। সন্ধ্যাবেলাতেই হাওড়া থেকে রাতের খাবার সবজি ও লুচি খেয়ে নেই ৪০ রুপিতে। শুকনো খাবার ও বড় বড় পানির বোতল কিনে রাখি। খরচ হয় জনপ্রতি ৫৫ রুপির মতো।

২য় দিনের খরচঃ ২০+২৫+৯৯৫+৩০+৬৫+৭+৪০+৫৫= ১২৩৭ রুপি

৩য় দিনঃ (ট্রেনে)

এইদিন সম্পূর্ণ ট্রেনেই কেটে যায়। সারাদিনে জনপ্রতি ১৫ রুপির মতো পানির খরচ হয়েছিলো। সকালে গতদিন কেনা শুকনো খাবার দিয়ে নাস্তা করি। দুপুরে ও রাতে ট্রেনের হকার থেকে ৮০ রুপি করে ডিম বিরিয়ানি কিনে খাই।

৩য় দিনের খরচঃ ১৫+৮০+৮০= ১৭৫ রুপি

৪র্থ দিনঃ (শিমলা)

ভোরবেলা কালকা পৌঁছাই। সকাল ৬.৩০টার টয় ট্রেনের মাত্র একটা বগিই ছিলো জেনারেল আর বাকিগুলো প্রি বুকড। আমরা ৮.৩০টার ট্রেনে উঠি যার সবগুলো বগিই জেনারেল। অর্থাৎ কোন সিট নির্দিষ্ট নেই। আগে উঠতে পারলে সিট পাবেন নতুবা দাঁড়িয়ে যেতে হবে। জেনারেলে টয় ট্রেনের টিকিট ৫০ রুপি করে। ট্রেনের ভিতরে হকার আসে না তাই স্টেশন থেকে ৩০ রুপি করে নাস্তা কিনে নিলাম। শিমলা পৌঁছে হাতের কাছের একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকে খাওয়াদাওয়া করে নিলাম জনপ্রতি ১৪০ রুপি খরচ হলো। তারপর কালিবাড়ী মন্দিরের পাশে একটা হোটেল নিলাম ১৬০০ রুপিতে। জনপ্রতি ২৬৭ রুপি পড়লো। হোটেল নেওয়ার সময় অবশ্যই গিজার আছে কিনা জিজ্ঞেস করে নিবেন। ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে মল রোডের একটা এজেন্সির কাছ থেকে মানালির বাস টিকেট কিনলাম ৬০০রুপিতে+২৫রুপি চার্জ। আপনারা চাইলে বাস স্ট্যান্ড থেকেও টিকিট কাটতে পারেন। দ্যা রিজের ওখানে স্ট্রিট ফুড টেস্ট করলাম ২০ রুপিতে। দ্যা রিজ থেকে এগিয়ে মান-শেরে-পাঞ্জাব নামক এক পাঞ্জাবী হোটেল থেকে পাঞ্জাবী ট্র‍্যাডিশনাল থালি ডিনার করলাম ১০০ রুপি করে।

৪র্থ দিনের খরচঃ ৫০+৩০+১৪০+২৬৭+৬২৫+২০+১০০= ১২৩২ রুপি

৫ম দিনঃ (শিমলা)

কালিবাড়ি মন্দিরের আশেপাশে অনেক খাবার হোটেল আছে। একটা হোটেলে ঢুকে আলুপরোটা, দই আর বাটার দিয়ে নাস্তা সারলাম। খরচ জনপ্রতি ৪৬ রুপি। কুফরি যাওয়ার জন্য গাড়িভাড়া করেছিলাম সেটি নিলো ১৬০০ রুপি। জনপ্রতি পড়লো ২৬৭রুপি (এইটা একটা ভুল বলা চলে। শিমলা থেকে কুফরি খুব একটা দূরে না। আর সবসময় লোকাল বাস আছে। বাসে করেই আসা-যাওয়া করা যেত। ২৬৭ রুপির জায়গায় হয়তো সর্বোচ্চ ৫০ রুপিতে কাজ হয়ে যেত)

কুফরি থেকে ফাগু ভ্যালি যাওয়ার জন্য ঘোড়া ভাড়া করলাম জনপ্রতি ৩০০ রুপিতে। ফাগু ভ্যালি যাওয়ার পথে এন্ট্রি ফি ১০ রুপি। আর পঞ্চায়েত চাঁদা না কিসের জন্য যেন টাকা নিলো আরো ১০ রুপি। ফাগু ভ্যালিতে নুডলস খেলাম ২০ রুপি দিয়ে। এপল বাগান, শ্যুটিং স্পট ঘুরে আবার ফাগু ভ্যালিতে এসে রাইস আর সবজি জাতীয় কিছু একটা দিয়ে দুপুরের খাবার খেলাম ৬২ রুপিতে। খাওয়া দাওয়া শেষে চা খেলাম ১০ রুপি করে।

শিমলা ব্যাক করে হোটেল থেকে চেকআউট করে ওল্ড বাস স্ট্যান্ড থেকে বাসে করে চলে গেলাম নিউ বাস স্ট্যান্ড। ভাড়া ১০ রুপি। বাস স্ট্যান্ডে ডিনারে মাটন বিরিয়ানী খেলাম ১০০ রুপি করে। (আরেকটা ভুল। পাহাড়ে বাস ভ্রমণের আগে ভুলেও ভারী খাবার খাবেন না। আমাদের সবার বমি হয়েছিলো)

আগে থেকেই মানালির বাস টিকেট কাটা ছিলো। সেটাতে চড়ে বসলাম।

৫ম দিনের খরচঃ ৪৬+২৬৭+৩০০+১০+১০+২০+৬২+১০+১০+১০০ = ৮৩৫ রুপি

৬ষ্ঠ দিনঃ (মানালি)

ভোরবেলা মানালি পৌঁছালাম। খাবার হোটেল সব বন্ধ ছিলো। চায়ের দোকান থেকে রুটি-বিস্কুট-কলা ও শেষে চা খাই। খরচ ৩০ রুপি। তারপর আশেপাশে খোঁজাখুঁজি করে সার্কিট হাউসে হোটেল গোল্ড প্যালেসে উঠলাম। হোটলের ভাড়া কম ছিলো আর মালিক-কর্মচারীদের ব্যবহার আচরণ অমায়িক ছিলো। জানালা দিয়ে বাইরের ভিউও সুন্দর পেয়েছিলাম। আমরা এডজাস্ট দুই রুমের একটা ঘর ভাড়া নিই ও দুই রাত স্টে করি। আমাদের থেকে ভাড়া নিয়েছিলো ৩৪০০ রুপি। অর্থাৎ জনপ্রতি ৫৬৭রুপি পড়ে। মল রোডের আশেপাশে অনেক খাবার হোটেল আছে। এমনকি বাংলা খাবারও পাওয়া যায়। আমরা খাসীর গোসত আর রাইস দিয়ে দুপুরের খাবার সারলাম। জনপ্রতি খরচ ১২০ রুপি। মল রোডের সাথেই বাস স্ট্যান্ড। ওখান থেকে দুইদিন পরের দিল্লীর বাস টিকিট কেটে নিলাম ৭৬০রুপি করে। চারজন একটি সিএনজিতে করে ক্লাবহাউসে যাই খরচ পড়ে জনপ্রতি ৩০ রুপি। ক্লাবহাউসে এন্ট্রি ফি ২০ রুপি। সেখান থেকে হেঁটে যাই হাদিম্বা দেবীর মন্দিরে। তারপর মল রোড পার হয়ে যাই বন বিহার। বন বিহারের এন্ট্রি ফি ৩০ রুপি। সেখান থেকে যাই তিব্বতিয়ান মনেস্ট্রিতে।

রাতের ডিনার করি মল রোডের পাশে “ভারতীয় খানা খাজানা” নামের এক মুসলিম হোটেলে হাফ প্লেট বাসমতি চালের চিকেন বিরিয়ানী ৮০ রুপি। 

৬ষ্ঠ দিনের খরচঃ ৩০+৫৬৭+১২০+৭৬০+৩০+২০+৩০+৮০= ১৬৩৭ রুপি

৭ম দিনঃ [রোথাং পাস (মানালি)]

হোটেল মালিক গত রাতে আমাদের রোথাং পাস যাওয়ার গাড়ি ঠিক করে দেন ৬৫০০ রুপিতে (ভুল। একেতো পুরা ফুল সিজন তার উপর আবার আমরা গাড়ি ভাড়া করেছি আগ রাতে। আগের দিন সকালে বুক করলেও ৫৫০০ রুপিতে পেতাম। আর সিজন না হলে আরো কমে গাড়ি পাওয়া সম্ভব ছিলো। অবশ্যই যেদিন মানালি যাবেন সেদিনই রোথাং পাসের গাড়ি ভাড়া করবেন।) খরচ জনপ্রতি ১০৮৩ রুপি। গাড়ি আমাদের সোজা নিয়ে যায় সোলাং ভ্যালি। সেখানে আমরা চা-বিস্কুট দিয়ে নাস্তা করি। খরচ ৩০ রুপি। পথে অসংখ্য দোকান আছে। আমরা এক দোকান থেকে রোথাং পাসে চলার জন্য ড্রেস ভাড়া করি। ড্রেস, বুট জুতা ও মোজা সবসহ ৩০০ রুপি। এরপর কিছুদূর গিয়ে একটা হোটেল থেকে সকালের খাবার নুডলস খেয়ে নিই ৬০ রুপি করে। দুপুরে রোথাং পাসে থালি খাই ১০০ রুপি। বরফে ট্রেকিংয়ের জন্য লাঠি কিনি ২০ রুপি করে। রোথাং পাস থেকে ফিরতে ফিরতে রাত হয়। মুরগী আর রাইস দিয়ে ডিনার করি। খরচ ১৩০ রুপি।

৭ম দিনের খরচঃ ১০৮৩+৩০+৩০০+৬০+১০০+২০+১৩০= ১৭২৩ রুপি

৮ম দিনঃ (মানালি-দিল্লী)

এইদিনে খাওয়াদাওয়া ছাড়া কোন খরচ হয়নি। সকালে স্যান্ডউইচ খেয়েছি ৩০ রুপিতে। দুপুর বারোটায় হোটেল থেকে চেকআউট করলাম। বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দুপুরে হালকা খাবার খেলাম জনপ্রতি ৮৬ রুপি। দিল্লীর বাসে চড়ে বসলাম। রাতে বাস যে রেস্টুরেন্টে ব্রেক দিলো সেখান থেকে ব্যুফে খেলাম ৭০ রুপি করে।

৮ম দিনের খরচঃ ৩০+৮৬+৭০=১৮৬ রুপি

৯ম দিন (দিল্লী)

ভোরবেলা বাস থেকে নেমে সিএনজি করে সোজা চলে গেলাম পাহাড়গঞ্জ নিউ দিল্লী রেল স্টেশন। ভাড়া জনপ্রতি ৫০ রুপি। দিল্লী স্টেশনের দোতলার ফরেনারদের টিকিট রিজার্ভেশন থেকে পরের দিন বিকেলের আগ্রা টু কলকাতা ট্রেন টিকেট কাটলাম। ভাগ্যগুণে জেনারেল টিকিটই পেয়ে গেলাম। (ফরেনার কোটায় কাটলে খরচ আরেকটু বেশি হতো) ভাড়া জনপ্রতি ৬০০ রুপি। এরপর সেখান থেকে বেরিয়ে সিএনজি করে চলে এলাম জামে মসজিদ। ভাড়া জনপ্রতি ৩৩ রুপি। হোটেল ভাড়া ১৩০০ রুপি। জনপ্রতি পড়লো ২১৭ রুপি। সকালের নাস্তা করলাম জামে মসজিদের বিপরীতে এক হোটেল থেকে। খরচ ৬০ রুপি। সেখানেই এক এজেন্সি থেকে পরদিন ভোরের দিল্লী-আগ্রা তাজ এক্সপ্রেসের ট্রেন টিকিট কাটলাম ২৪০+১০(এজেন্ট ফি)= ২৫০রুপিতে। দুপুরে লাঞ্চ করলাম ৯৩ রুপিতে। হেঁটে গেলাম রেড ফোর্ট। রেড ফোর্ট এন্ট্রি ফি ৫০ রুপি। রেড ফোর্ট থেকে বেরিয়ে উবারে করে গেলাম ইন্ডিয়া গেট। ভাড়া জনপ্রতি ৪৭ রুপি। সেখান থেকে আবার জামে মসজিদ ব্যাক করলাম সিএনজিতে জনপ্রতি ৩৩ রুপি। রাতে হাফ কেজি বিরিয়ানী খেলাম ৭০ রুপি।

৯ম দিনের খরচঃ ৫০+৬০০+৩৩+২১৭+৬০+২৫০+৯৩+৫০+৪৭+৩৩+৭০= ১৫০৩ রুপি

১০ম দিন (আগ্রা)

ভোরবেলা হোটেল থেকে চেকআউট করে অটো করে গেলাম নিউ দিল্লী স্টেশন। ভাড়া জনপ্রতি ২০ রুপি। স্টেশনে নাস্তা করে নিলাম ৪০ রুপিতে। আগ্রা স্টেশনে নেমে সিএনজিতে করে গেলাম তাজ মহল। ভাড়া জনপ্রতি ১৫ রুপি। তাজ মহল এন্ট্রি সার্কভুক্ত দেশের নাগরিকদের জন্য ৫৪০ রুপি। (তাজমহলের ভেতরে ঢোকাসহ ৭৫০ রুপি) তাজমহল ঘুরে অটোতে করে আসলাম আগ্রা ফোর্ট। ভাড়া জনপ্রতি ১০ রুপি। তাজমহলের টিকিট দেখালে আগ্রা ফোর্টের এন্ট্রিতে কম রাখে। ৪০ রুপি লাগলো এন্ট্রি ফি। বেরিয়ে সিএনজিতে করে স্টেশনে ব্যাক করলাম। ভাড়া ১৫ রুপি। স্টেশনের পাশে অনেক রেস্টুরেন্ট আছে। দুপুরে চিকেন বিরিয়ানী খেলাম ১২০ রুপি করে৷

১০ম দিনের খরচঃ ২০+৪০+১৫+৫৪০+১০+৪০+১৫+১২০= ৮০০ রুপি

১১তম দিন

যাত্রাপথে একটা স্টেশন থেকে সকালের নাস্তা কেনা হলো জনপ্রতি ৪২রুপি। পানি জনপ্রতি ১০ রুপি। দুপুরের খাবার জনপ্রতি ৮০ রুপি। দমদমে নামলাম সন্ধ্যায়। এসপ্ল্যানেড গেলাম মেট্রোতে ১০ রুপি করে। আবার সেই মির্জা গালিব স্ট্রিটে গেলাম। এবার উঠলাম ডিয়ার হোটেলে। ভাড়া ১২০০ রুপি। জনপ্রতি ২০০ রুপি। রাতের খাবার সেই মুসলিম হোটেলে কালাভূনা দিয়ে। খরচ ৬০ রুপি।

একাদশতম দিনের খরচঃ ৪২+১০+৮০+১০+২০০+৬০= ৪০২ রুপি

১২তম দিন

সকালে নাস্তা করলাম ৪০ রুপি।

দুপুর বারোটায় হোটেল থেকে চেকআউট করে একটা ট্যাক্সি নিয়ে চলে এলাম শিয়ালদহ স্টেশন। ভাড়া জনপ্রতি ৩০ রুপি। শিয়ালদহ থেকে বনগাঁ মেইল ট্রেনের টিকিট ২০ রুপি। দুপুরের খাবার ৮০ রুপি। বনগাঁ স্টেশন থেকে পেট্রাপোল বর্ডার জনপ্রতি ১৫ রুপি।

দ্বাদশ দিনের খরচঃ ৪০+৩০+২০+১৫= ১০৫ রুপি

মোট খরচ

সুতরাং মোট খরচঃ ৪৯০+১২৩৭+১৭৫+১২৩২+৮৩৫+১৬৩৭+১৭২৩+১৮৬+১৫০৩+৮০০+৪০২+১০৫= ১০৩২৫ রুপি

কিছু ভুল না হলে ১০ হাজারেরও কমে এই ট্যুর দেওয়া সম্ভব ছিলো।

আরো কিছু কথাঃ

  • আমাদের দেশে টাকার খরচ এখানে যুক্ত করা হয়নি। বেনাপোল যাওয়া, খাওয়াদাওয়া আবার ফেরার পথে বেনাপোল থেকে আসা ও ঐ সময়ের খাওয়া দাওয়ার জন্য বাংলা টাকা লাগবে।
  • এখানে শুধু বেসিক খরচটাই আলোচনা হয়েছে। পারসোনাল খরচ, শপিং ইত্যাদির জন্য আরো কিছু রুপি লাগবে। (ব্যক্তিগতভাবে আমার সবমিলিয়ে ১৩ হাজার রুপির মত খরচ হয়েছিলো। আবার আরেকজনের ১৭ হাজার রুপির মতো খরচ হয়েছিলো)
  • প্যারাগ্লাইডিং, জিপ লাইনিং ইত্যাদি অনেক এডভেঞ্চার একটিভিটি পাবেন কুফরি (শিমলা) ও ক্লাবহাউসে (মানালি)। সেরকম কিছু করার ইচ্ছা থাকলে এক্সট্রা বাজেট ধরবেন।
  • দেশে হোক দেশের বাইরে হোক নির্দিষ্ট স্থান ব্যতীত কেউ কোন আবর্জনা ফেলবেন না। পরিবেশ ঠিক রাখুন আর ভ্রমণের আনন্দ উপভোগ করুন!

পরের পর্ব

যদিও পর্ব এখানেই শেষ তবে। আমার অভিজ্ঞতা থেকে কিছু গুরত্বপুর্ন টিপস নিয়ে আরেকটি পর্ব লিখেছি। তাই আরো জানতে ঝটপট পোস্টটি পড়ে নিন।

আশা করি এই পোস্ট ট্রাভেলারদের কাজে লাগবে আর আপনারা আরো কমে এই ট্যুর দিতে পারবেন। কোন প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় করতে পারেন। আমি যথাসাধ্য উত্তর দেয়ার চেষ্টা করব। কষ্ট করে পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

নোটিশঃ সম্পুর্ন লেখা কপি করা নিষেধ। কোথাও কোন বিশেষ অংশ সাহায্যের জন্য দিতে পারেন তবে অবশ্যই ক্রেডিট হিসেবে এই পোস্টের লিংক দিবেন। অনেক সময় দিয়ে আপনাদের সুবিধার্ধে এই লেখাটি লিখা হয়েছে, তাই আশা করব কপি পেস্ট থেকে বিরত থেকে লেখকের কষ্টের মূল্য দিবেন। 🙂

সালমান রহমান পিয়াল

আমি একজন ভ্রমণপিয়াসী মানুষ! ভালো লাগে ঘুরে বেড়াতে। প্রায় প্রতিদিনই সাইকেল বা বাইক নিয়ে ঘুরে বেড়াই ফরিদপুর। এছাড়াও দেশের বত্রিশটি জেলা ঘুরেছি। গিয়েছি পাশের দেশ ভারতে। ইচ্ছে আছে পুরো পৃথিবী ভ্রমণ করার!পেশায় আমি ছাত্র। ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ইইই বিভাগের শেষ বর্ষে অধ্যয়নরত আছি।

কমেন্ট করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.