Last updated on July 17th, 2023 at 11:01 am
ভ্রমণ কর বা ট্রাভেল ট্যাক্স কি? বাংলাদেশ থেকে বিদেশ ভ্রমণ করলে দেশ ত্যাগের সময় সরকারকে ভ্রমণ কর বা ট্রাভেল ট্যাক্স দিতে হয়। চলুন আজ জেনে নেই ট্রাভেল ট্যাক্স কোন পথে কত ও কীভাবে দিতে হয়।
Table of Contents
২ ভ্রমণ কর বা ট্রাভেল ট্যাক্স কত?
যাত্রার পথের উপর নির্ভর করে ভ্রমণ করের পরিমাণ ভিন্ন হয়। তবে বাই এয়ার ও নৌপথে ভ্রমণ কর টিকেটের সাথেই ইনক্লুড থাকে। স্থলপথে ভ্রমণকারীরাই সাধারণত ট্রাভেল ট্যাক্স নিয়ে চিন্তা করেন। আর আমরা যারা স্থলপথে ভ্রমণ করি তাদের জন্য এ করের পরিমাণ নিম্নরূপ।
ভ্রমণকারীর ধরন | পরিমান |
প্রাপ্ত বয়স্ক (১২+ বছর) | ১০০০ টাকা |
অপ্রাপ্ত বয়স্ক (৫-১২ বছর) | ৫০০ টাকা |
শিশু (০-৫ বকছর) | ফ্রি |
৩ ট্রাভেল ট্যাক্স কোথায় দিতে হয়?
ট্রাভেল ট্যাক্স বর্ডারে ভ্রমণ কর বুথে বা আগে থেকেই সোনালি ব্যাংকের কোন শাখায় জমা দিতে হয়। আমার মতে বর্ডারে সময় ও ঝামেলা এড়াতে যাত্রা শুরুর আগেই ভ্রমণ কর দিয়ে দেয়া উচিৎ। কারণ এতে আপনাকে বর্ডারে ভ্রমণ কর দেয়ার জন্য লাইনে দাড়াতে হবে না। এছাড়া এক্সট্রা ফিও লাগে বর্ডারে। আর অনেক বর্ডার যেমন ডাউকিতে ভ্রমণ কর নেয়ার কোন সিস্টেম নেই। এখানে আগে কর দিয়ে না গেলে ঝামেলা হয় আর শেষ ব্যবস্থা হিসেবে ১০০-৩০০ টাকা বেশি দিলে ওরা ব্যাবস্থা করে দেয়। আর আপনি যদি প্রায়ই ভ্রমণ করেন তাহলে আপনি কয়েকটি ভ্রমণ কর আগে থেকেই দিয়ে রশিদ নিয়ে রাখতে পারেন। কারণ ভ্রমণ করে কোন তারিখ বা মেয়াদ উল্লেখ থাকে না।
আমি এবছর জানুয়ারিতে বুড়িমারি/চ্যাংড়াবান্ধা বর্ডার দিয়ে ভূটানে যাওয়ার সময়েও ট্রাভেল ট্যাক্স আগে দিয়ে গিয়েছিলাম। একটা জিনিস দেখলাম যে যদি সুযোগ থাকে তাহলে আগে থেকে দিয়ে গেলে ভাল। তবে আপনি যদি বর্ডারে দালাল দিয়ে ইমিগ্রেশন করাতে চান তাহলে আগে থেকে না দিয়ে গেলেও সমস্যা নেই। ওরা ম্যানেজ করে দেয়।
৩.১ অনলাইনে ট্রাভেল ট্যাক্স জমা
এখন আপনি চাইলে অনলাইনেও ভ্রমণ কর দিতে পারেন। ২৬ জানুয়ারি ২০২০ থেকে শুধুমাত্র বেনাপোল, দর্শনা এবং ভোমরা স্থল বন্দর দিয়ে ভ্রমণকারীগণ এই সেবা পাবেন। শীঘ্রই অন্যান্য বন্দর এই সেবার আওতায় আসবে।
অনলাইনে ভ্রমণ কর দিতে ভিজিট করুন এই লিংক http://sbl.com.bd:7070/nbrTravelTax/Collection/Create
এরপর তথ্যগুলো পূরণ করে পরের স্টেপে গেলে আপনার সুবিধামত পেমেন্ট মেথডে পে করতে পারেবেন। বর্তমানে সোনালী ব্যাংকের এই গেটওয়েতে মাস্টারকার্ড, ভিসা, কিউ ক্যাশ ও রকেট দিয়ে পে করতে পারবেন। এই সিস্টমের সার্ভিস চার্জ হল ১০ টাকা। পেমেন্ট হলে পিডিএফ আকারে একটা রশিদ পাবেন যে টা প্রিন্ট করে বর্ডার ক্রসের সময় সাথে নিতে হবে।
৩.২ সোনালী ব্যাংকের কোন শাখায় ট্রাভেল ট্যাক্স জমা নেয়?
আমি নিজে নিউ মার্কেট শাখায় দিয়েছি। আর সদরঘাট, কাওরানবাজার ও ঢাকা ক্যান্টঃ কর্পোরেট শাখায় দেয়া যায় বলে আমি নিশ্চিত করে বলছি। তবে অফিসিয়াল তথ্য অনুযায়ী ঢাকায় অবস্থিত সোনালী ব্যাংকের নিমোক্ত শাখাগুলোতে ট্রাভেল ট্যাক্স দেয়া যায়। আমি সবগুলোর গুগল ম্যাপ লিংক দিয়ে দিচ্ছি যাতে আপনাদের খুঁজে পেতে সহজ হয়।
- স্থানীয় কার্যালয়, ঢাকা (শাপলা চত্বরের টা)
- দিলকুশা কর্পোরেট শাখা, ঢাকা
- নিউমার্কেট শাখা, ঢাকা
- কাওরান বাজার শাখা, ঢাকা
- সদরঘাট শাখা, ঢাকা
- ওয়েজ আর্নার্স কর্পোরেট শাখা, ঢাকা
- রমনা কর্পোরেট শাখা, ঢাকা
- বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কর্পোরেট শাখা, ঢাকা
- বি-ওয়াপদা কর্পোরেট শাখা, ঢাকা
- ঢাকা ক্যান্টঃ কর্পোরেট শাখা, ঢাকা
- হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর শাখা, ঢাকা (ম্যাপে খুঁজে পেলাম না, কেউ পেলে জানাবেন প্লিজ)
এছাড়া ঢাকার বাইরের জেলাগুলোর শাখাগুলোর সম্পুর্ন লিস্ট দেখুন এখানে।
এখানে উপরের ছবির মত ট্রাভেল ট্যাক্সের জন্য স্পেশাল রশিদে বা চালানে ভ্রমণ কর জমা নেয়। অবশ্যই সাথে করে পাসপোর্ট নিয়ে যাবেন। আর অন্য কারোটা আপনি দিলে বা অন্য কাউকে দিয়ে নিজেরটা দিলে অবশ্যই মেইন পাসপোর্ট বা এর ফটোকপি/স্ক্যানকপি নিয়ে যাবেন।
৩.৩ ট্যাক্স কোড
এছাড়া আপনি চালানের মাধ্যমেও সোনালি ব্যাংকের কিছু শাখায় ট্রাভেল ট্যাক্স জমা দিতে পারবেন। তবে আগে ব্যাংকে গিয়ে জেনে নিন যে তারা চালানের মাধ্যমে ভ্রমণ কর নেয় কিনা। চালানের মাধ্যমে জমা দিতে হলে আপনার দরকার হবে ভ্রমণ কর চালান কোড। সোনালী ব্যংকের শাঁখাগুলো অনেকগুলো জোনে বিভক্ত। এই একেক জোনের শাখাগুলোর জন্য একেক রকম কোড। ব্যাংক থেকে জেনে নিন কোন কোড ব্যবহার করতে হবে। জমা দেয়ার আগে ব্যাংকের লোকদের সাথে কথা বলে নিন যে আপনি কোন কোডটি ব্যবহার করবেন।
ঢাকা নিউ মার্কেট শাখা ও সদরঘাট শাখাতে একই কোড ইউজ করে ভ্রমন কর জমা নিচ্ছে। এইটা ঢাকার ভ্রমণ কর কোড।
সোনালী ব্যংক ঢাকা জোনের ভ্রমণ কর কোড ১-১১৪১-০০০১-০৯১১
৩.৪ ট্রাভেল ট্যাক্স চালান ফরম পূরণ
আর চালানের মাধ্যমে দিলে অবশ্যই চালানে আপনার পাসপোর্ট নাম্বার, নাম, ঠিকানা, ইত্যাদি বড় হাতের ইংরেজি অক্ষরে লিখবেন। আমি নিচে একটি স্যাম্পল দিয়ে দিচ্ছি এভাবে চালান ফরম পূরণ করবেন।
৪ সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর
হ্যা। আপনি যতবার বাই রোডে ইন্ডিয়া যাবেন ততবারই আপনাকে ভ্রমণ কর দিতে হবে।
ট্রাভেল ট্যাক্সের মেয়াদ দেয়া থাকে না। সে হিসেবে বলা যায় সরকার নতুন করে ভ্রমণ করের পরিমাণ সংশোধন না করলে এইটা ভ্যালিড থাকবে।
আশা করি ভ্রমণ কর বা ট্রাভেল ট্যাক্স সম্পর্কিত সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পেরেছি। এছাড়া অন্য কোন প্রশ্ন থাকলেও নিচে কমেন্ট করুন। আমি যথাসম্ভব দ্রুত উত্তর দিতে চেষ্টা করব। Happy Travelling 🙂
আমি অনলাইনে ভ্রমণ টেক্স পরিশোধ করেছিলাম। কিন্তু তা আখাউড়া বন্দরে রাখে নাই। অন লাইনে পরিশোধিত টেক্স বেনাপোল, দর্শনা এবং ভোমরা স্থল বন্দর ছাড়া অন্য বন্দর দিয়ে যাওয়ার কালে এখন পর্যন্ত এলাউ করছে না। আমি এর মেয়াদ কাল সম্পর্কে জানতে চাইলে কাষ্টম অফিসার জানালেন এর মেয়াদ 03 মাস।
আখাউড়াতে রাখবে কেন? অনলাইনে উল্লেখ ছিল কোন কোন পোর্টে নিবে। সাধারণত মেয়াদ থাকে না। ধন্যবাদ
চালানের মাধ্যমে ট্রাভেল ট্যাক্স জমা দিলে চালানের কপি ছাড়া আর কিছু দেয়? যেমন “জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের যাত্রী কপি”? আজ সাভার ক্যান্টনমেন্ট সোনালী ব্যাংক শাখায় জমা দেয়ার পর চালানের তিনটা কপির একটা ফেরত দিয়েছে। Immigration এ চালানের এই কপিটা জমা দিলেই হবে?
ধন্যবাদ
না আর কিছু দেয় না। তবে আপনাকে দুইটা কপি ফেরত দেয়ার কথা। একটা আপনার কাছে থাকবে আর একটা ইমিগ্রেশনের কাছে।
আপডেটঃ ট্রাভেল ট্যাক্সের ক্ষেত্রে চালানের একটা কপিই আপনাকে দিবে।
ধন্যবাদ ভাই। আমি ওই কপিটা ফটোকপি করে নিবো।।
এটাই ভাল আইডিয়া। যদিও বর্ডার পার হওয়ার পরে আর এটা লাগে না।
ভ্রমণের কত দিন আগে ভ্রমণ ট্যাক্স দিতে হবে।? আমি যদি ৫দিন আগে দি তাহলে হবে?
এমন কোন নিয়ম নেই। আপ্নার যখন খুশি দিবেন। হবে।
ধন্যবাদ, আপনার লেখা আমার ভ্রমনের পথ সহজ করবে আশা রাখি।
জেনে ভাল লাগল। আপনার ভ্রমণ শুভ হোক।
প্রথমবার টুরিস্ট ভিসা ব্যবহার করতে না পারলে পরবর্তীতে কি ভিসা পেতে সমস্যা হবে?
না