Last updated on November 18th, 2021 at 06:59 pm
আশা করি সবাই ভালা আছেন। আমি আমার কলকাতা-শিমলা-মানালি-দিল্লী-আগ্রা ভ্রমনের কাহিনী লিখেছি দুই পর্বে। এছাড়া আরকটি পর্ব ছিল সম্পুর্ন ট্যুরের বিস্তারিত খরচ নিয়ে। আর আজ এই ট্যুরটি ভালভাবে সম্পন্ন করতে আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য কিছু টিপস। এটি হচ্ছে ইন্ডিয়া ভ্রমন কাহিনী [পর্ব-৪]। আগের পর্বগুলো এখনো পড়ে না থাকলে পড়ে নিন এক্ষুনি। আগের পর্বগুলোতে পুরো ভ্রমণের বর্ণনা ও খরচ পাবেন দেখতে পারবেন।
টিপস
- ট্যুরের অন্যতম একটি বিষয় হচ্ছে সদস্যসংখ্যা। এর উপর ভিত্তি করে খরচ বাড়বে/কমবে। এই ট্যুরে আমরা ছয়জন ছিলাম। আমার মনে হয় এটিই পারফেক্ট। কেননা আপনি হোটেলে খুঁজলে ৬ জনের জন্য এক রুম পাবেন কিন্তু ৭ জন কখনো এক রুমে থাকতে পারবেন না। ৬ জন এক রুম নেওয়ার চাইতে ৭ জন দুই রুম নিলে জনপ্রতি খরচটা বেড়ে গেলো অনেকখানি। এরপর Uber XL দিয়ে এক ক্যাবেই ৬ জন ভ্রমণ করতে পারবেন। অটো নিলে এক অটোতেই ছয়জন। সিএনজি নিলে লাগবে দুই সিএনজি।
- পাসপোর্ট, ভিসা, ডলার এনডোর্সমেন্ট, ট্রাভেল ট্যাক্স সহ সব কাগজপত্র আগে থেকেই রেডি করে বর্ডারে যাবেন। ঝক্কি ঝামেলা কম পোহাতে হবে।
- বর্ডারে আর পুরো ট্যুরের মধ্যে বিশেষ করে আগ্রাতে প্রচুর দালাল ঘিরে ধরবে। সবসময় দালাল এভয়েড করবেন। নিজে যাচাই-বাছাই করে তারপর সিদ্ধান্ত নিবেন।
- ভারতে বাস বা রেলস্টেশনে, ট্রেনে সিগারেট নিষিদ্ধ, মেট্রো স্টেশনে ছবি তোলা নিষিদ্ধ। যেখানেই যান নিয়ম কানুন মেনে চলবেন। দেশের সম্মান নষ্ট করবেন না।
- ভারতীয়রা ট্রেনের লং ট্যুরের টিকিটগুলো অনেক আগে থেকেই কেটে রাখে। আপনি দেশে বসেই ভারতীয় রেলের টিকিট কেটে রাখতে পারবেন। আগে থেকে টিকিট কাটলে ভাড়া কম লাগে, সিটের নিশ্চয়তা পাওয়া যায়।
- ট্রেন বা বাস সংক্রান্ত সকল তথ্য কিছু এপসে পাবেন। সেগুলো মোবাইলে ইন্সটল করে যাবেন যেমন Where is my train, ixigo, hrtc এবং Uber
- যেসব এলাকায় যাবেন সেসব জায়গার অফলাইন গুগল ম্যাপ ডাউনলোড করে রাখবেন।
- ফরেনার কোটায় ট্রেনের টিকিট একসাথে সর্বোচ্চ ৫টা পাওয়া যায়। এ বিষয়টা মাথায় রাখবেন। ৫ জনের বেশি হলে আলাদা আরেক ফরমে বাকিদের নাম এন্ট্রি করবেন ও আলাদাভাবে সিরিয়াল নিবেন।
- ইমিগ্রেশন থেকে বেরিয়েই অনেক মানি এক্সচেঞ্জ পাবেন। যেখানে ভালো রেট পান সেখান থেকে ডলার ও টাকাকে রুপিতে কনভার্ট করে নেবেন। চাইলে একই এজেন্টের বেনাপোল অফিসে টাকা জমা রেখে ইমিগ্রেশন পার করে পেট্রোপোল অফিস থেকে রুপি নিতে পারেন। এক্ষেত্রে আরো ভালো রেট পাবেন।
- একদম সব টাকাই রুপিতে কনভার্ট করবেন না। যতটুকু খরচ এস্টিমেট করছেন ততটুকুই করুন কারণ দেশে রুপি নিয়ে আসা নিষিদ্ধ। সব রুপি ওখানেই খরচ করে আসতে হবে।
- বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন আপনার পাসপোর্টে ডিপারচার সিল ও ভারতের ইমিগ্রেশন এরাইভাল সিল লাগিয়ে দিবে। বর্ডার পার করার পর পাসপোর্টের ও এই সিল সহ ভিসার জেরক্স (ফটোকপি) করে নিবেন ৪/৫কপি।
- ট্রেনে খাবার পানির ব্যবস্থা নাই। পানির বোতল সাথে রাখবেন। where is my train এপটির মাধ্যমে নেট ছাড়াই দেখতে পারবেন ট্রেনটি এখন কোথায় আছে, সামনে কোন স্টেশন, সেখানে কতক্ষণ থামবে। প্রত্যেকটি স্টেশনে ৫ রুপির বিনিময়ে এক লিটার বিশুদ্ধ ঠাণ্ডা পানি ভরার বুথ আছে। কোন স্টেশনে ট্রেন মিনিট পাঁচেক এর জন্য থামলেই বোতল নিয়ে বুথে গিয়ে পানি নিয়ে নিবেন।
- ট্রেনের আর পাহাড়ের উপরে খাবারের দাম অনান্য জায়গার তুলনায় বেশি। এর জন্য আগে থেকে শুকনো খাবার কিনে রাখতে পারেন।
- টয় ট্রেনের টিকিট আগে থেকে বুক করতে পারেন তবে খরচ হবে প্রায় পাঁচগুণ। খরচ কমাতে কালকা গিয়ে টিকেট কাটবেন। আর ৮.৩০টার টয় ট্রেন যেইটার সব বগি জেনারেল সেটাতে উঠবেন। তাতে ঝামেলা কম হবে।
- ভিন্ন দেশ তাই খাবারও ভিন্ন রকম। যেখানে যা চোখে পড়ে তা-ই সবাই কিনে খাবেন না। দেখতে ভালো লাগলেও স্বাদ আপনার ভালো নাও লাগতে পারে। আগে অল্প পরিমাণে কিনে টেস্ট করে পরে সবার জন্য নিতে পারেন।
আশা করি এই পোস্ট ট্রাভেলারদের কাজে লাগবে আর আপনারা আরো কমে এই ট্যুর দিতে পারবেন। কোন প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় করতে পারেন। আমি যথাসাধ্য উত্তর দেয়ার চেষ্টা করব। কষ্ট করে পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
নোটিশঃ সম্পুর্ন লেখা কপি করা নিষেধ। কোথাও কোন বিশেষ অংশ সাহায্যের জন্য দিতে পারেন তবে অবশ্যই ক্রেডিট হিসেবে এই পোস্টের লিংক দিবেন। অনেক সময় দিয়ে আপনাদের সুবিধার্ধে এই লেখাটি লিখা হয়েছে, তাই আশা করব কপি পেস্ট থেকে বিরত থেকে লেখকের কষ্টের মূল্য দিবেন। 🙂